মিরু হাসান বাপ্পী, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি: ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করে সারাদেশে ইউপি নির্বাচন শেষ করার ঘোষনা দেন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। এমন সংবাদ দেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রচারিত হলে সান্তাহার ইউপিতে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। বগুড়ার সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান, মেম্বার ও সংরক্ষিত নারী আসনের ইউপি সদস্য পদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা আগাম গনসংযোগ ও কৌশলে প্রচার-প্রচারনা শুরু করেছেন।
সম্ভাব্য প্রাথীদের দৌঁড় ঝাঁপে ইউপি এলাকা এখন সরগরম হয়ে উঠেছে। নির্বাচনের দিনক্ষন নির্ধারন না হলেও প্রার্থীদের দৌর ঝাঁপে নির্বাচনের আমেজ দিন দিন জমে উঠছে। ইতিমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীরা দোয়া কামনা করে নিজেদের ছবি সম্বলিত পোষ্টার লাগিয়ে গোটা পৌর এলাকা ছাপিয়ে ফেলেছেন। গ্রামের প্রতিটি পাড়ায় এখন নির্বাচনের আলাপ চারিতাই প্রাধান্য পাচেছ।
ভোটারদের সমর্থন নিতে তারা নিচেছন নানা কৌশল। কোন গ্রামের ব্যাক্তির মৃত্যু সংবাদ পেলেই সম্ভাব্য প্রাথীরা ছুটছেন মৃতের বাড়ীতে। কি মুসলীম আর কি হিন্দুদের বাড়ীতে যেতেও তারা ভুল করছেন না। মৃত ব্যাক্তির বাড়ীতে গিয়ে তারা পরিবারের লোকজনদের দিচেছন শান্তনা। তবে ভোটাররা করছেন অন্য হিসাব নিকাস।
তারা হিসেব কষছেন অতীত ও ভবিষ্যৎ নিয়ে। অতীতে কে কি করেছেন এবং ভবিষ্যতে কার দ্বারা ইউনিয়নের উন্নয়ন হবে এসব হিসেব কষতেও ভুল করছেন না সাধারন ভোটাররা। দলীয় ভাবে নির্বাচন করার কারনে দলীয় মনোনয়ন পেতে তাই সম্ভাব্য প্রার্থীরা দৌড়ঝাঁপ, লবিং,
গ্রুপিং শুরু করেছে। দলীয় মনোনয়ন পেতে প্রার্থীরা উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। কে পাচ্ছেন আওয়ামী ও বিএনপির চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন এনিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। কে হচ্ছেন সান্তাহার ইউপিতে আগামী দিনের চেয়ারম্যান তা নিয়ে ইউনিয়নবাসী কৌতুহলের শেষ নেই।
দলীয় সুত্রে জানা গেছে, আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের প্রাধান্য দেবে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। এ জন্য কেন্দ্রীয় ভাবে চেয়ারম্যান মনোনয়ন দিতে চাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ। আর অপরদিকে আসন্ন ইউপি নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহন করবেন কিনা তা এখন সিদ্ধান্ত হয়নি। ইতিমধ্যে আওয়ামলীগের দলের হাই-কমান্ডের কাছে সম্ভাব্য চেয়ারম্যানের তালিকা চেয়েছেন। তবে বড় দুই দলের দাবী যে সব প্রার্থী দলের জন্য যারা নিবেদিত প্রান, দলীয় বিভিন্ন কর্মকান্ডে সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহন করে দল কে সামনে দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে এমন ত্যাগী নেতা কে আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হবে।
গত ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ সমর্থিত নৌকা মার্কা প্রার্থী এরশাদুল হক টুলু চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। আসন্ন সান্তাহার ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আগাম প্রচারনা ও গনসংযোগে মাঠে নেমেছেন তাদের মধ্যে রয়েছে- ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ৪ জন, বিএনপির ১ জন, জাতীয় পাটির ১ জন ও সতন্ত্র ১ জন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে।
চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ থেকে যারা নির্বাচনে মাঠে নেমেছেন তারা হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এরশাদুল হক টুলু, আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামীলীগের ১নং যুগ্ন সাধারন সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম চম্পা, নারী উদ্যোক্তা নাহিদা সুলতানা তৃপ্তি, সান্তাহার ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি।
বিএনপির ১ জন প্রার্থী হলেন সান্তাহার ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক মিজানুর রহমান তালুকদার জুয়েল, সান্তাহার ইউনিয়ন জাতীয় পাটির নেতা মুক্তার হোসেন মল্লিক আর স¦তন্ত্র প্রার্থী সান্তাহার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোজাহারুল ইসলাম পিন্টু। তবে মাঠে বিএনপির প্রার্থীর প্রচারনায় না থাকায় জাতীয় পাটির প্রার্থী, আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা ও স্বতন্ত্র ১ প্রার্থী মাঠ গরম করে চলেছেন।
আওয়ামীলীগ বর্তমান চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু বলেন, মানুষের সাথে মিলেমিশে সুখে-দুঃখে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। এলাকায় মাদক, সন্ত্রাস ও অবৈধ কর্মকান্ড নির্মূল করতে নৌকা মার্কা নিয়ে বিজয়ী হয়েছি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এবারও বিপুল ভোটে ইউনিয়নবাসী আমাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবে।
আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামীলীগের ১নং যুগ্ন সাধারন সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম চম্পা বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে এই ইউনিয়ন পরিষদকে একটি মডেল ও ডিজিটাল ইউনিয়নের রুপান্তর করবেন। বর্তমান সরকারের বহুমুখী উন্নয়ন কর্মকান্ডের ধারাবাহিকতায় তিনি সান্তাহার ইউনিয়নকে সার্বিক উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত করতে চান।
স্বতন্ত্র প্রার্থী সান্তাহার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোজাহারুল ইসলাম পিন্টু বলেন, আমি সান্তাহার ইউনিয়নের আগে চেয়ারম্যান ছিলাম। আমার কিছু অসমাপ্ত কাজ আছে তা সমাপ্ত করে যেতে চাই। সান্তাহার ইউনিয়নকে মাদক মুক্ত ও দুর্নীতি মুক্ত ঘোষনা করে চাই।
জাতীয় পাটির সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী মুক্তার হোসেন মল্লিক বলেন, সান্তাহার ইউনিয়নকে নতুন ভাবে সাজাতে চাই। সাধারন মানুষের সেবা দীর্ঘদিন ধরে করে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে আরোও ভালো ভাবে সেবা করার ইচ্ছা নিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।